মাতা সীতাদেবী এক একটি স্বর্ণ অলঙ্কার সব বানরদের প্রদান করছেন । সকলে প্রণাম করে মাতা সীতার প্রদত্ত উপহার গ্রহণ করছে। একে অপরকে দেখাচ্ছে। হুপহুপ শব্দে তারা আনন্দ প্রকাশ করছে । বিকট আকৃতির হনুমানেরা সেই সকল উপহার নেওয়ার জন্য সারিবদ্ধ ভাবে অবস্থান করছে । এইভাবে দান পর্ব চলছে। এবার সব শেষে এল হনুমানকে দেবার পালা। একে কি দেওয়া যায় ? ভরত, লক্ষ্মণ বলল- “বৌঠান! পশু জাতি অলঙ্কার আর কি পড়বে ? একে বরং কিছু ফলমূল প্রদান করা হোক!” মাতা সীতা বললেন- “পুত্র হনুমান! তুমি কি নেবে বাছা?” হনুমান করজোড়ে বলল- “মা! আপনি প্রভু শ্রীরাম সহিত চিরকাল আমার নয়নের মণিতে অবস্থান করুন। ইহা ছাড়া আমার আর কিছুই প্রাপ্তির ইচ্ছা নেই।” এই শুনে ভরত, লক্ষ্মণ সহ সকলে হাস্য করতে লাগলো। ভাবতে লাগল- মর্কট পশুর আবার এত বড় ভক্তি! এই ভেবে হাস্য করতে লাগলো । তখন মাতা সীতাদেবী একটি বহুমূল্য মুক্তাহার হনুমানকে প্রদান করলেন। যার একটি মুক্তা সাত রাজার ঐশ্বর্যের সমান ছিলো । সকলে ভাবতে লাগলো মাতা সীতা একি করলেন। ‘বাঁদরের গলায় মুক্তার মালা’- একি শোভা পায়! এই বাঁদর কি এর মূল্য বুঝতে পারবে ? হনুমান সেই মাতা সীতার উপহার ভক্তি ভরে গ্রহণ করলো। তারপর মুক্তার মালা হাতে নিয়ে দেখতে লাগলো। মুক্তা গুলির মধ্যে কি যেনো দেখতে লাগলো মনোযোগ সহকারে । কি যেনো গন্ধ শুঁকতে লাগলো। সকলে হনুমানের কাণ্ড দেখে হাস্য করে বলতে লাগলো- “আরে মূর্খ কপি! জীবনে কদলী বিনা আর কিছু ত চিনলে না। এই বহুমূল্য উপহার সাত জন্মেও স্বপ্নেও দেখতে পেতে না।” হনুমান এবার করলো কি মুক্তার মালা একটানে ছিন্ন করলো। মুক্তগুলি গড়িয়ে পড়লো। সকলে হায় হায় করতে লাগলো। একি বুদ্ধি! এত মূল্যবাণ মাল্যকে ছিড়ে ফেলা? মানুষ সামান্য ধন সম্পত্তি কেই কত যত্নে তুলে প্রহরা দিয়ে সর্বদা ধন সম্পত্তির চিন্তা করে- এই মর্কট কিনা সেই মূল্যবাণ সম্পদ কেই ছিন্ন করলো। বোকা আর কাহাকে বলে ।
তারপর হনুমান করলো কি মুক্তা গুলি তুলে গন্ধ শুঁকে চিবিয়ে কি যেনো দেখতে লাগলো। থুথু করে চিবানো মুক্তা ফেলে দিলো। এই ভাবে সেই প্রতিটি মুক্তা চিবিয়ে থুথু করে ফেলে দিলো । ভরত বলল- “বৌঠান! এই মর্কট কি মুক্তার মালা মর্ম বোঝে? এত বদ্ধ মূর্খ। সব মুক্তা ফেলে দিচ্ছে।” ভগবান শ্রীরাম ও মাতা সীতা এই দৃশ্য দেখে মৃদুমৃদু হাস্য করতে লাগলেন । উপস্থিত লোকেরা অবাক হল। কিন্তু উপস্থিত ব্রহ্মজ্ঞ মুনি ঋষিরা মোটেও অবাক হল না । লক্ষ্মণ বলল- “হনুমান! তুমি এইসব কি উন্মাদের ন্যায় আচরণ করলে? জানো এই মুক্তার মালা কত মূল্যবাণ। আর তুমি একে হেলায় নষ্ট করলে? সত্যই তুমি একেবারে মূর্খ।”
দেখিয়া হনুর কর্ম হাসেন লক্ষ্মণ ।
কুপিত রহস্য- ভাবে বলেন তখন ।।
লক্ষ্মণ বলেন প্রভু করি নিবেদন ।
মারুতির গলে হার দিলে কি কারণ ।।
( কৃত্তিবাসী রামায়ণ )
লক্ষ্মণ এই কথা ভগবান শ্রীরামকে জিজ্ঞেস করলেন । ভগবান শ্রীরাম বললেন- “এর উত্তর হনুমান দিতে পারবে। তাহাকেই জিজ্ঞেস করো!” মাতা সীতাও হনুমানকে জিজ্ঞেস করলেন। লক্ষ্মণ, ভরত সকলে জিজ্ঞেস করলো হনুমানকে । হনুমান বললেন-
হনুমান বলে , শুন ঠাকুর লক্ষ্মণ ।
বহুমূল্য বলি হার করিনু গ্রহণ ।।
দেখিলাম বিচার করিয়া তার পরে ।
রামনাম নাহি এই হারের ভিতরে ।।
রামনাম হীন যাতে এমন ধন ।
পরিত্যাগ করা ভাল নাহি প্রয়োজন ।।
( কৃত্তিবাসী রামায়ণ )
হনুমান বললেন- “হে ঠাকুর শ্রী লক্ষ্মণ! এই মালাতে রাম নাম নেই। এই মাল্যতে প্রভু শ্রীরামের চরণে অর্পিত পুস্পের সুবাস নেই। এই মাল্যতে প্রভু শ্রীরামের প্রসাদের স্বাদ নেই। এই মালা আমার কি প্রয়োজন ? রাম নাম যাহাতে নেই, তাহা ত্যাগ করাই উত্তম। কারণ রাম নাম ভিন্ন সব কিছুই অসার। তাহা গ্রহণ করে কি লাভ?” এবার দেখুন হনুমানের ভক্তি। ‘রামনাম’ যাহাতে নেই তাহাতে মন দিয়ে কি লাভ ? সাধারণ মানব স্বল্প সম্পদ কে মহা যত্নে তুলে সর্বদা তার চিন্তা করে। এই জন্য ধনী ব্যক্তির চোখে ঘুম থাকেনা, তার মনে ঈশ্বর চিন্তাও আসে না। কারণ তার সমগ্র মন জুড়ে কেবল ঐ ধনসম্পদের চিন্তাই বিরাজ করে । দিবারাত্রি আরো চাই, আরো চাই বলে চেঁচাতে থাকে। ধন প্রাপ্তির কামনা তাহাতে বিদ্যমান। তাই ত তুলসীদাস গোস্বামী মহারাজ বলেছে- “যাহা কাম, তাহা নাহি রাম/ যাহা রাম, তাহা নাহি কাম”। সর্বদা আরোও চাই আরোও চাই- এইরূপে ধনের কামনা করলে মনে ঈশ্বরকে বসানোর স্বল্প জায়গাও থাকে না, কিন্তু এই ‘চাই,চাই’ ভাবনা দূর হলে সেখানে প্রভু বিরাজিত হন ।
ভগবান শ্রীরামের ইচ্ছায় মাতা সীতাদেবী হনুমানকে এই ধন প্রদান করেছিলেন । শ্রী বিষ্ণুর সহধর্মিণী মাতা লক্ষ্মী দেবী তাই করেন । তিঁনি ভগবানের ভক্তকে পরীক্ষা গ্রহণ করেন। ধন সম্পদ প্রদান করেন। কিন্তু ভক্ত কি চায় ? “আধ্যাত্মিকধন, চারিত্রিকধন, ভক্তিধন”- ইহাই মাতা লক্ষ্মীর কাছে কামনা করেন। তখন প্রভু সেই উত্তীর্ণ ভক্তকে কাছে টেনে নেন । ভক্তের কাছে গজমতী হার নয়- তুলসীমাল্য সর্বশ্রেষ্ঠ ধন সম্পদ। গজমতী হারে ঐশ্বর্য প্রকাশ, নিজেকে ধনী জ্ঞান, ধন চিন্তার মানসিকতা বৃদ্ধি পায় – কিন্তু তুলসীমাল্য ধারণে প্রভুর চিন্তা, প্রভুর ভজনা, দম্ভনাশ , ঈশ্বর চিন্তা, সাধুসঙ্গের ইচ্ছা বৃদ্ধি হয়। যাই হোক এবার লক্ষ্মণ বললেন- “তুমি এমন ভাব করছ যেনো তুমিই আদত ভক্ত! দেখাও দেখি তোমার অন্তরে প্রভু শ্রীরাম আছেন নাকি? যদি না থাকে তবে এই দেহ ছেড়ে দাও। কারণ রামহীন দ্রব্য যেহেতু তুমি স্পর্শ করো না।” হনুমান বলল- “অবশ্যই! যদি প্রভুকে হৃদয়ে স্থান দিতে না পারি তবে আর ভক্ত হলাম কি ? মন মন্দিরে এই যুগল রূপ বিরাজিত করেছি। আমার প্রতি অস্থিতে ‘রামনাম’ লেখা আছে।” এই বলে তখন হনুমান জী করলেন কি “জয় শ্রী রাম” বলে বুকে নিজ হস্তের নখ বিদ্ধ করলেন । বুক থেকে রক্তধারা নির্গত হল। তারপর টান মেরে হনুমান নিজের বুক ছিন্ন করলেন। রক্তে রক্তময় হল। হনুমানের বুক থেকে রক্ত বের হতে লাগলো। সকলে দেখলো তাজ্জব কাণ্ড। হনুমানের বুকে শ্রীরাম বামে সীতাদেবী সহ অবস্থান করছেন । সকলে হা করে দেখতে লাগলো এই দৃশ্য । ভয়ে অনেকে শিউড়ে উঠলো। কেউ কেউ আবার হনুমানের ন্যায় পরম ভক্তকে প্রণাম জানালো। দেবতারা হনুমানের ওপর পুস্প দিতে লাগলেন । ভরত, শত্রুঘ্ন, লক্ষ্মণ এই দৃশ্য দেখে অবাক হলেন। তিন ভ্রাতার তিন পত্নী, তিন রাজামাতা, মন্ত্রী সুমন্ত্র এছারা বিভীষণ, জাম্বুবান, সুগ্রীব, অঙ্গদ সকলে দেখতে লাগলেন । ভরত, লক্ষ্মণ বললেন- “হনুমান! আমাদিগকে ক্ষমা করো। তোমার ন্যায় ভক্ত আর হয় না- যে কিনা বক্ষঃ ছিন্ন করে ইষ্টকে দর্শন করাতে পারে। তুমিই প্রকৃত ভক্ত।” ভগবান শ্রীরাম ও মাতা সীতাদেবীর নয়ন জলে ভরে গেলো। শ্রীরামচন্দ্র ছুটে এসে হনুমানের বুকে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল- “হনুমান! তুমি আমাকে এত ভক্তি শ্রদ্ধা করো। আমি তোমাকে আশীর্বাদ করছি- আজ হতে আমার সাথে সাথে তোমারও পূজা হবে। আমার ভক্ত হয়েও যে তোমার পূজা করবে না- সে আমার কৃপা কোনোকালেই পাবে না।” মাতা সীতাদেবী আশীর্বাদ করলেন। প্রভু শ্রীরাম তখন হনুমানকে আলিঙ্গন করলেন ।
( ক্রমশঃ )
তারপর হনুমান করলো কি মুক্তা গুলি তুলে গন্ধ শুঁকে চিবিয়ে কি যেনো দেখতে লাগলো। থুথু করে চিবানো মুক্তা ফেলে দিলো। এই ভাবে সেই প্রতিটি মুক্তা চিবিয়ে থুথু করে ফেলে দিলো । ভরত বলল- “বৌঠান! এই মর্কট কি মুক্তার মালা মর্ম বোঝে? এত বদ্ধ মূর্খ। সব মুক্তা ফেলে দিচ্ছে।” ভগবান শ্রীরাম ও মাতা সীতা এই দৃশ্য দেখে মৃদুমৃদু হাস্য করতে লাগলেন । উপস্থিত লোকেরা অবাক হল। কিন্তু উপস্থিত ব্রহ্মজ্ঞ মুনি ঋষিরা মোটেও অবাক হল না । লক্ষ্মণ বলল- “হনুমান! তুমি এইসব কি উন্মাদের ন্যায় আচরণ করলে? জানো এই মুক্তার মালা কত মূল্যবাণ। আর তুমি একে হেলায় নষ্ট করলে? সত্যই তুমি একেবারে মূর্খ।”
দেখিয়া হনুর কর্ম হাসেন লক্ষ্মণ ।
কুপিত রহস্য- ভাবে বলেন তখন ।।
লক্ষ্মণ বলেন প্রভু করি নিবেদন ।
মারুতির গলে হার দিলে কি কারণ ।।
( কৃত্তিবাসী রামায়ণ )
লক্ষ্মণ এই কথা ভগবান শ্রীরামকে জিজ্ঞেস করলেন । ভগবান শ্রীরাম বললেন- “এর উত্তর হনুমান দিতে পারবে। তাহাকেই জিজ্ঞেস করো!” মাতা সীতাও হনুমানকে জিজ্ঞেস করলেন। লক্ষ্মণ, ভরত সকলে জিজ্ঞেস করলো হনুমানকে । হনুমান বললেন-
হনুমান বলে , শুন ঠাকুর লক্ষ্মণ ।
বহুমূল্য বলি হার করিনু গ্রহণ ।।
দেখিলাম বিচার করিয়া তার পরে ।
রামনাম নাহি এই হারের ভিতরে ।।
রামনাম হীন যাতে এমন ধন ।
পরিত্যাগ করা ভাল নাহি প্রয়োজন ।।
( কৃত্তিবাসী রামায়ণ )
হনুমান বললেন- “হে ঠাকুর শ্রী লক্ষ্মণ! এই মালাতে রাম নাম নেই। এই মাল্যতে প্রভু শ্রীরামের চরণে অর্পিত পুস্পের সুবাস নেই। এই মাল্যতে প্রভু শ্রীরামের প্রসাদের স্বাদ নেই। এই মালা আমার কি প্রয়োজন ? রাম নাম যাহাতে নেই, তাহা ত্যাগ করাই উত্তম। কারণ রাম নাম ভিন্ন সব কিছুই অসার। তাহা গ্রহণ করে কি লাভ?” এবার দেখুন হনুমানের ভক্তি। ‘রামনাম’ যাহাতে নেই তাহাতে মন দিয়ে কি লাভ ? সাধারণ মানব স্বল্প সম্পদ কে মহা যত্নে তুলে সর্বদা তার চিন্তা করে। এই জন্য ধনী ব্যক্তির চোখে ঘুম থাকেনা, তার মনে ঈশ্বর চিন্তাও আসে না। কারণ তার সমগ্র মন জুড়ে কেবল ঐ ধনসম্পদের চিন্তাই বিরাজ করে । দিবারাত্রি আরো চাই, আরো চাই বলে চেঁচাতে থাকে। ধন প্রাপ্তির কামনা তাহাতে বিদ্যমান। তাই ত তুলসীদাস গোস্বামী মহারাজ বলেছে- “যাহা কাম, তাহা নাহি রাম/ যাহা রাম, তাহা নাহি কাম”। সর্বদা আরোও চাই আরোও চাই- এইরূপে ধনের কামনা করলে মনে ঈশ্বরকে বসানোর স্বল্প জায়গাও থাকে না, কিন্তু এই ‘চাই,চাই’ ভাবনা দূর হলে সেখানে প্রভু বিরাজিত হন ।
ভগবান শ্রীরামের ইচ্ছায় মাতা সীতাদেবী হনুমানকে এই ধন প্রদান করেছিলেন । শ্রী বিষ্ণুর সহধর্মিণী মাতা লক্ষ্মী দেবী তাই করেন । তিঁনি ভগবানের ভক্তকে পরীক্ষা গ্রহণ করেন। ধন সম্পদ প্রদান করেন। কিন্তু ভক্ত কি চায় ? “আধ্যাত্মিকধন, চারিত্রিকধন, ভক্তিধন”- ইহাই মাতা লক্ষ্মীর কাছে কামনা করেন। তখন প্রভু সেই উত্তীর্ণ ভক্তকে কাছে টেনে নেন । ভক্তের কাছে গজমতী হার নয়- তুলসীমাল্য সর্বশ্রেষ্ঠ ধন সম্পদ। গজমতী হারে ঐশ্বর্য প্রকাশ, নিজেকে ধনী জ্ঞান, ধন চিন্তার মানসিকতা বৃদ্ধি পায় – কিন্তু তুলসীমাল্য ধারণে প্রভুর চিন্তা, প্রভুর ভজনা, দম্ভনাশ , ঈশ্বর চিন্তা, সাধুসঙ্গের ইচ্ছা বৃদ্ধি হয়। যাই হোক এবার লক্ষ্মণ বললেন- “তুমি এমন ভাব করছ যেনো তুমিই আদত ভক্ত! দেখাও দেখি তোমার অন্তরে প্রভু শ্রীরাম আছেন নাকি? যদি না থাকে তবে এই দেহ ছেড়ে দাও। কারণ রামহীন দ্রব্য যেহেতু তুমি স্পর্শ করো না।” হনুমান বলল- “অবশ্যই! যদি প্রভুকে হৃদয়ে স্থান দিতে না পারি তবে আর ভক্ত হলাম কি ? মন মন্দিরে এই যুগল রূপ বিরাজিত করেছি। আমার প্রতি অস্থিতে ‘রামনাম’ লেখা আছে।” এই বলে তখন হনুমান জী করলেন কি “জয় শ্রী রাম” বলে বুকে নিজ হস্তের নখ বিদ্ধ করলেন । বুক থেকে রক্তধারা নির্গত হল। তারপর টান মেরে হনুমান নিজের বুক ছিন্ন করলেন। রক্তে রক্তময় হল। হনুমানের বুক থেকে রক্ত বের হতে লাগলো। সকলে দেখলো তাজ্জব কাণ্ড। হনুমানের বুকে শ্রীরাম বামে সীতাদেবী সহ অবস্থান করছেন । সকলে হা করে দেখতে লাগলো এই দৃশ্য । ভয়ে অনেকে শিউড়ে উঠলো। কেউ কেউ আবার হনুমানের ন্যায় পরম ভক্তকে প্রণাম জানালো। দেবতারা হনুমানের ওপর পুস্প দিতে লাগলেন । ভরত, শত্রুঘ্ন, লক্ষ্মণ এই দৃশ্য দেখে অবাক হলেন। তিন ভ্রাতার তিন পত্নী, তিন রাজামাতা, মন্ত্রী সুমন্ত্র এছারা বিভীষণ, জাম্বুবান, সুগ্রীব, অঙ্গদ সকলে দেখতে লাগলেন । ভরত, লক্ষ্মণ বললেন- “হনুমান! আমাদিগকে ক্ষমা করো। তোমার ন্যায় ভক্ত আর হয় না- যে কিনা বক্ষঃ ছিন্ন করে ইষ্টকে দর্শন করাতে পারে। তুমিই প্রকৃত ভক্ত।” ভগবান শ্রীরাম ও মাতা সীতাদেবীর নয়ন জলে ভরে গেলো। শ্রীরামচন্দ্র ছুটে এসে হনুমানের বুকে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল- “হনুমান! তুমি আমাকে এত ভক্তি শ্রদ্ধা করো। আমি তোমাকে আশীর্বাদ করছি- আজ হতে আমার সাথে সাথে তোমারও পূজা হবে। আমার ভক্ত হয়েও যে তোমার পূজা করবে না- সে আমার কৃপা কোনোকালেই পাবে না।” মাতা সীতাদেবী আশীর্বাদ করলেন। প্রভু শ্রীরাম তখন হনুমানকে আলিঙ্গন করলেন ।
( ক্রমশঃ )
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন