১২ নভেম্বর ২০১৬

রামায়ণ কথা ( লঙ্কাকাণ্ড পর্ব- ৪৪ )


বৃহৎ ধর্ম পুরাণে আছে কুম্ভকর্ণের জাগরিত হওয়ার পর পিতামহ ব্রহ্মা দেবীর বোধন করেছিলেন । দেবতারা তখন প্রজাপতিকে বললেন- “হে ব্রহ্মণ ! আপনি মত প্রদান করুন । আমরা শ্রীরামের বিজয়ের নিমিত্ত স্বস্ত্যয়ন করবো ।” প্রজাপতি ব্রহ্মা দেখলেন যে কৃষ্ণ পক্ষের আর অল্পই অবশিষ্ট। অতএব শুক্লপক্ষ শুরু হবে খুব নিকটেই । মহালয়ার অমাবস্যাতে কৃষ্ণ পক্ষ সমাপ্ত। পিতৃপক্ষ সমাপ্ত হয়ে দেবীপক্ষ আরম্ভ হয় । এইসময় রাবণ দেবীর কৃপা পেলে তাঁহাকে বধ করা যাবে না । ব্রহ্মা বললেন- “শুন দেবতা গণ ! এই সময় শ্রীরামের রাবনজয়ের জন্য আমাদের স্বস্ত্যয়ন করা উচিৎ । কিন্তু ভগবতীর বোধন ছাড়া এই স্বস্ত্যয়ন করে লাভ নেই। সুতরাং পূর্বে দেবীর বোধন করা উচিৎ । এই বলে প্রজাপতি দেবতাদের নিয়ে ভগবতী মহামায়ার স্তব করতে লাগলেন- “ হে পরমা তোমাকে প্রণাম জানাই। তুমি কমলনয়না , শাম্ভবী, শঙ্করী , ত্রিলোচনা বরদা কালিকা । হে আদিশক্তি তুমি ভক্তিপ্রিয়া, ভক্তিস্বরূপা , ভবানী। তুমিই ভীমা আবার তুমিই ভীমাননা । হে দেবী, তুমি বৈষ্ণবীশক্তি , তুমি সৃষ্টি- স্থিতি- প্রলয় করো। তোমাকে প্রণাম । তুমি মৌলিভূমি, চন্দ্রকলা শোভিতা , তুমি শ্যামা, গৌরী , বিচিত্রা, শ্বেতা , সুন্দরী। তুমিই দেবতাদের শক্তি , শক্তিধারিনী, দ্বিভুজা , ষড় ভুজা , কৌমারী রূপিনী। তুমিই কালরূপা, দশভুজা , লক্ষ সুলোচনা, অষ্টাদশভুজা আবার ষোড়শভুজা। হে দেবী তুমি কোটিরশ্মিতে আবৃতা। তুমি সূক্ষ্মা , শুদ্ধা, স্থূলা, খর্বা , দীর্ঘ জিহ্বা , অপ্রমেয়া, কামরূপিনী যন্ত্ররূপা । সকলে তোমাকেই স্তব করে । তুমি সর্ব স্থানে বিরাজিতা । তোমার জঠরে অনন্ত কোটি ব্রহ্মাণ্ড বিরাজ করে। তুমি দুর্গতি নাশিনী দুর্গা , হরা । তুমিই শিবের বক্ষে অবস্থিতা । কমল লোচনা, শান্তা, কমলবাসিনী, পদ্মালয়া তোমাকে প্রণাম করি । তুমি স্বাহা তুমিই লজ্জা, তুমিই স্বধা তুমিই ত্রিগুণা।” ( বৃহৎ ধর্ম পুরাণ- পূর্ব খণ্ড – একবিংশোধ্যায় ) দেবতাদের স্তব শ্রবণ করে ভগবতী মহামায়া তখন আবির্ভূতা হলেন কুমারী রূপে। 


দেবী কুমারী বললেন- “দেবতাগণ! আমি তোমাদের স্তবে সন্তুষ্ট । আগামীকাল তোমরা বিল্ব বৃক্ষ তলে সেই ভগবতীর বোধন করবে । সেই সময় দেবী বোধিত হইবেন । বিল্ব বৃক্ষ তলে দেবীর পূজা করার পর শিবের পূজা করবে । তোমাদের এবং মহাত্মা রামের কার্যসিদ্ধি হবে।” পর দিন ব্রহ্মা ও দেবতাবৃন্দ মিলে সমগ্র বিশ্ব ভ্রমণ করতে করতে একস্থান দেখলেন বিল্ব বৃক্ষ তলে বিল্ব পত্রের মধ্যে ক্ষুদ্র একটি বালিকা নিদ্রামগ্ন হয়ে আছে । তিঁনি তপ্ত কাঞ্চন বর্ণা , বিম্বোষ্ঠী, সুচারু নব মাল্যে ভূষিতা । সেই দেবীই ভগবতী অম্বিকা। তখন ব্রহ্মাদি দেবতাগণ করজোড়ে স্তব আরম্ভ করলেন –

জানে দেবীমীদৃশীং ত্বাং মহেশীং
ক্রীড়াস্থানে স্বাগতাং ভূতেলহস্মিন্ ।
শত্রুস্তং বৈ মিত্ররূপা চ দুর্গা
দুর্গম্যা ত্বং যোগিনামন্তরেহপি ।।

অর্থাৎ- ব্রহ্মা কহিলেন – হে দেবী , হে মহেশ্বরী আমি জানিয়াছি তুমি ক্রীড়াচ্ছলে ভূতলে এইস্থানে শুভাগমন করিয়াছ । দুর্গে ! তুমি শত্রুরূপাও বটে , মিত্ররূপাও বটে; তুমি যোগীগণের অন্তরেও দুর্লভা ।

একানেকা সূক্ষ্মরূপাবিকারা
ব্রহ্মাণ্ডানি কোটিকোটীঃ প্রসূষে ।
কোহহং বিষ্ণুঃ কোহপরো বা শিবোখ্যা
দেবাশ্চানো স্তোতুমীশা ভবেম ।।

অর্থাৎ- তুমি একা, তুমি অনেকা, তুমি সূক্ষ্মরূপা অবিকারা ; তুমি কোটি কোটি ব্রহ্মাণ্ড প্রসবিনী, আমি কি, , বিষ্ণু কি , শিব কি, অনান্য দেবতাগণই বা কি - আপনার স্তবে কেহ সমর্থ নহে ।

ত্বং বৈ স্বাহা ত্বং স্বধা ত্বঞ্চ বৌষট্
ত্বঞ্চোঙ্কারস্তঞ্চ লজ্জাদিবীজম্ ।
ত্বং বৈ স্ত্রী চ ত্বং পুমান্ সর্বরূপা
ত্বাং সংনত্বা বোধয়ে নঃ প্রসীদ ।।

অর্থাৎ- আপনি স্বাহা , স্বধা , বৌষট্ ; আপনি প্রনব এবং হ্রী প্রভৃতি বীজ । আপনি স্ত্রী , আপনি পুরুষ ( অধিক কি) আপনিই সর্বস্বরূপা ; আপনাকে প্রনাম করিয়া বোধিত করিতেছি , আমাদের প্রতি প্রসন্না হন ।

ত্বং বৈ বর্ষো দেবতা কালরূপ ।
ত্বং বৈ মাসস্তং ঋতুশ্চায়নে দ্বে ।
কব্যং ভূঙ্খে ত্বং যথা বৈ স্বধাখ্যা
তদ্বৎ স্বাহা হব্যভোক্তস্ব দেবি ।।

অর্থাৎ- হে মাতঃ ! আপনিই কালরূপা দেবতা, আপনিই বর্ষ, মাস, অয়নদ্বয় ; হে দেবি! আপনি স্বধারূপে যেমন কব্য ভোজোন করেন, তেমনিই স্বাহারূপে হব্য ভোজোন করিয়া থাকেন ।

ত্বং বৈ দেবাঃ শুক্লপক্ষেষূ পূজ্যা-
স্তং পিত্রাদ্যাঃ কৃষ্ণপক্ষে প্রপূজ্যাঃ ।
ত্বং বৈ সত্যং নিস্প্রপঞ্চস্বরূপাং
ত্বাং নত্বাহং বোধয়ে নঃ প্রসীদ ।।

অর্থাৎ- আপনিই শুক্লপক্ষে পূজ্য দেবগণ , আবার আপনিই কৃষ্ণপক্ষে পূজনীয় পিতৃগণ । আপনিই নিস্প্রপঞ্চ সত্যস্বরূপ ; আপনাকে প্রনাম করিয়া বোধিত করিতেছি , আপনি আমাদিগের প্রতি প্রসন্ন হোন ।

দ্বারেণার্কেণায়নে ত্বাদ্যাকে ত্বাং
মুক্তিং যান্তিং ত্বৎপদধ্যানযোগাৎ ।
চন্দ্রদ্বারেণায়নে তু দ্বিতীয়ে
ত্বাং বৈ মুক্তিং যান্ত্যমী দেবি সূক্ষ্মম ।।

অর্থাৎ- আপনার চরণাবিন্দধ্যানযোগী জন উত্তরায়ণে সূর্য দ্বারা মুক্তিরূপিনী আপানকেই প্রাপ্ত করেন । আর দক্ষিণায়নে সূক্ষ্মা মুক্তিস্বরূপা আপনাকে চন্দ্র দ্বারা লাভ করেন ।

উচ্চৈর্ণীচং নীমুচ্চৈশ্চ কর্তুং
চন্দ্রঞ্চার্কং ত্বং বিধাতুং সমর্থা ।
তত্রাকালে শক্তিরূপা ভব ত্বং
ত্বাং নত্বাহং বোধয়ে তৎ প্রসীদ ।।

অর্থাৎ- উচ্চকে নীচ করিতে এবং নীচকে উচ্চ করিতে , চন্দ্রকে সূর্য করিতে বা সূর্যকে চন্দ্র করিতে আপনিই সমর্থা , এখন অকালে শক্তিরূপা হন । আপনাকে নমস্কার করিয়া বোধিত করি , অতএব প্রসন্না হউন ।

ত্বং বৈ শক্তী রাবণে রাঘবে বা
রুদ্রেন্দ্রাদৌ ময্যপীহান্তি যা চ ।
সা ত্বং শুদ্ধা রামমেকং পবর্ত্ত
তৎ ত্বাং দেবীং বোধয়ে নঃ প্রসীদ ।।

অর্থাৎ- রাম, রাবণ, রুদ্র, ইন্দ্র এবং অস্মদাদি ব্যক্তিতে যে যে শক্তি বর্তমান, সে সবই আপনি । সেই সর্বশক্তি রূপিনী আপনি সমষ্টিরূপে একমাত্র রামেতেই প্রবৃত্ত হউন, হে দেবি ! সেই জন্যই আপনাকে বোধিত করিতেছি , আমাদের প্রতি প্রসন্ন হউন । ( বৃহদ্ধর্মপুরাণ – পূর্ব খন্ড- দ্বাবিংশোহধ্যায়ঃ )

যেহেতু শ্রাবন থেকে পৌষ হল- দক্ষিণায়ন । এসময় দেবতারা নিদ্রিত থাকেন । তাই ব্রহ্মা বললেন-

ঐ রাবণস্য বধ্যার্থায় রামস্যানুগ্রহায় চ ।
অকালে তু শিবে বোধস্তব দেব্যাঃ কৃতো ময়া ।।
( বৃহদ্ধর্মপুরাণ – পূর্ব খন্ড- দ্বাবিংশোহধ্যায়ঃ )

এর অর্থ- রাবণ বধের জন্য এবং রামের প্রতি অনুগ্রহ করিবার জন্য – হে দেবী ! শিবে ! অকালে আমি তোমার বোধন করিতেছি ।

আজও সঙ্কল্পে এই মন্ত্র পাঠ হয় শারদীয়া দুর্গা পূজায় । দেবী অভয়া দুর্গা নানা ভাবে অসুর নিধন করেছেন। দুর্গা পূজা মহাশক্তির আরাধনা । সেই দশভুজা দুর্গা দেবী বললেন- “ শুক্লা সপ্তমী তিথিতে আমি শ্রীরামের শরে প্রবেশ করবো । শুক্লা অষ্টমী তিথিতে রামচন্দ্র ও রাবণের ঘোর যুদ্ধ হবে। শুক্লা নবমী তিথিতে শ্রীরামের বাণে বারবার রাবনের মস্তক ছিন্ন হয়ে ভূমিতে পড়েও জোড়া লাগিবে । অবশেষে শুক্লা নবমী তিথি অপরাহ্ণে রাবণ বধ হবে। শুক্লা দশমী তিথিতে শ্রীরাম বিজয় উৎসব করবেন।” ঐ দুর্গা পূজার তিথি কিভাবে কাটাবেন সে সম্বন্ধে উল্লেখ আছে উক্ত পুরাণে। চার বর্ণের মানব একত্রে দেবীর পূজা করবেন। হিংসা দ্বেষ কলহ দম্ভ ত্যাগ করে মহামায়ার ভক্তি করবেন । দীক্ষিতেরা জপের পরিমাণ বৃদ্ধি করবেন। দান- ধ্যান শুভ কর্ম করবেন। দেবীর প্রসাদ গ্রহণ করবেন । বিষয় চিন্তা, কুবুদ্ধি ত্যাগ করে শুদ্ধ ভাবে কাটাবেন । এবং সন্ধি পূজার সময় দেবীর সম্মুখে গুরু প্রদত্ত বীজ মন্ত্র জপ করবেন । বৈষ্ণব, শৈব, শাক্ত সব মতের মানুষ দের এক নিয়ম। মা দুর্গা বিষ্ণু ভক্তি প্রদান করেন। অতএব কৃষ্ণ উপাসক দের ওপর থেকে তিনি মোহজাল উন্মোচন করে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কাছে পৌছাবার পথ উন্মুক্ত করবেন । সুতরাং তুলসীমাল্য, রুদ্রাক্ষে যাতেই জপ করুন না কেন- ঐ সময় পরিমাণ বৃদ্ধি করবেন । এই সব না করে যারা অশাস্ত্রীয় ভাবে ঐ পূজার সময় দিন যাপন করবে- তারা ঘোর নরকে যাবে বলে উক্ত পুরাণে লেখা ।

( ক্রমশঃ ) 
Share:

Total Pageviews

বিভাগ সমুহ

অন্যান্য (91) অবতারবাদ (7) অর্জুন (4) আদ্যশক্তি (68) আর্য (1) ইতিহাস (30) উপনিষদ (5) ঋগ্বেদ সংহিতা (10) একাদশী (10) একেশ্বরবাদ (1) কল্কি অবতার (3) কৃষ্ণভক্তগণ (11) ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু (21) ক্ষুদিরাম (1) গায়ত্রী মন্ত্র (2) গীতার বানী (14) গুরু তত্ত্ব (6) গোমাতা (1) গোহত্যা (1) চাণক্য নীতি (3) জগন্নাথ (23) জয় শ্রী রাম (7) জানা-অজানা (7) জীবন দর্শন (68) জীবনাচরন (56) জ্ঞ (1) জ্যোতিষ শ্রাস্ত্র (4) তন্ত্রসাধনা (2) তীর্থস্থান (18) দেব দেবী (60) নারী (8) নিজেকে জানার জন্য সনাতন ধর্ম চর্চাক্ষেত্র (9) নীতিশিক্ষা (14) পরমেশ্বর ভগবান (25) পূজা পার্বন (43) পৌরানিক কাহিনী (8) প্রশ্নোত্তর (39) প্রাচীন শহর (19) বর্ন ভেদ (14) বাবা লোকনাথ (1) বিজ্ঞান ও সনাতন ধর্ম (39) বিভিন্ন দেশে সনাতন ধর্ম (11) বেদ (35) বেদের বানী (14) বৈদিক দর্শন (3) ভক্ত (4) ভক্তিবাদ (43) ভাগবত (14) ভোলানাথ (6) মনুসংহিতা (1) মন্দির (38) মহাদেব (7) মহাভারত (39) মূর্তি পুজা (5) যোগসাধনা (3) যোগাসন (3) যৌক্তিক ব্যাখ্যা (26) রহস্য ও সনাতন (1) রাধা রানি (8) রামকৃষ্ণ দেবের বানী (7) রামায়ন (14) রামায়ন কথা (211) লাভ জিহাদ (2) শঙ্করাচার্য (3) শিব (36) শিব লিঙ্গ (15) শ্রীকৃষ্ণ (67) শ্রীকৃষ্ণ চরিত (42) শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু (9) শ্রীমদ্ভগবদগীতা (40) শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা (4) শ্রীমদ্ভাগব‌ত (1) সংস্কৃত ভাষা (4) সনাতন ধর্ম (13) সনাতন ধর্মের হাজারো প্রশ্নের উত্তর (3) সফটওয়্যার (1) সাধু - মনীষীবৃন্দ (2) সামবেদ সংহিতা (9) সাম্প্রতিক খবর (21) সৃষ্টি তত্ত্ব (15) স্বামী বিবেকানন্দ (37) স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (14) স্মরনীয় যারা (67) হরিরাম কীর্ত্তন (6) হিন্দু নির্যাতনের চিত্র (23) হিন্দু পৌরাণিক চরিত্র ও অন্যান্য অর্থের পরিচিতি (8) হিন্দুত্ববাদ. (83) shiv (4) shiv lingo (4)

আর্টিকেল সমুহ

অনুসরণকারী

" সনাতন সন্দেশ " ফেসবুক পেজ সম্পর্কে কিছু কথা

  • “সনাতন সন্দেশ-sanatan swandesh" এমন একটি পেজ যা সনাতন ধর্মের বিভিন্ন শাখা ও সনাতন সংস্কৃতিকে সঠিকভাবে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য অসাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে গঠন করা হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য নিজের ধর্মকে সঠিক ভাবে জানা, পাশাপাশি অন্য ধর্মকেও সম্মান দেওয়া। আমাদের লক্ষ্য সনাতন ধর্মের বর্তমান প্রজন্মের মাঝে সনাতনের চেতনা ও নেতৃত্ত্ব ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা কুসংষ্কারমুক্ত একটি বৈদিক সনাতন সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এ পথচলায় আপনাদের সকলের সহযোগিতা কাম্য । এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। সনাতন ধর্মের যে কেউ লাইক দিয়ে এর সদস্য হতে পারে।