রাবণের বারবার মুণ্ড কেটে আবার জোড়া হতে লাগলো। চারপাশে কেবল রাবণের অট্টহাস্য শোনা গেলো । ইহা ব্যতীত অন্য কিছু শোনা গেলো না। যখন ভগবান শ্রীরাম, রাবণের মুণ্ড কাটেন, তখন বানর, দেবতা সকল আনন্দে জয়ধ্বনি করেন। কিন্তু রাবণের কাটা মুণ্ড জোড়া লাগতেই সে আনন্দ উচ্ছ্বাস কোথায় যেনো অদৃশ্য হয়ে যায় । যতবার রাবণের মুণ্ড কাটা হয়, ততবার দেবতা ও বানরেরা ভাবেন এবার বুঝি রাবণ হত হয়েছে। কিন্তু যখন সেই কাটামুণ্ড আবার জোড়া লাগে, মনে হয় তাঁহাদিগের সমস্ত আশা যেনো জলে ভেসে যায় । রাবণ অট্টহাস্য করে বলল- “ওরে ভিখারী রাম! কেন ব্যর্থ চেষ্টা করছিস ? রাবণের অন্ত হয় না। কোনযুগেই হয় না।” এই বলে রাবণ অঙ্গুলিহেলন করলো রাক্ষস দের । সাথে সাথে লঙ্কার রাক্ষসেরা ক্ষেপণ যন্ত্র মারফৎ বানর সেনাদের দিকে আগুনের গোলা নিক্ষেপ করলো। কোটি কোটি আগুনের গোলা লঙ্কার দিক থেকে ছুটে আসতে লাগলো। যেনো মনে হল আকাশ হতে জলন্ত উল্কাপিণ্ড ছুটে আসছে । সেই আগুনের গোলা বানর কটকে এসে পড়লো। ভীষণ দাবানলে বানরেরা পুরে মরতে লাগলো। অনবরত আগুনের গোলার আঘাতে সুগ্রীবের সেনা ক্রমশ কমে আসতে লাগলো । তখন ভগবান শ্রীরাম পুনঃ কোটি গোলা ছুটে আসতে দেখে বরুণ বাণ নিক্ষেপ করলেন। আকাশ হতে যেনো বৃষ্টি নামলো। সমস্ত আগুনের গোলা নিভে গেলো । এই দেখে রাবণ গর্জন করে কুড়ি হস্ত দিয়ে নানা ঘাতক অস্ত্র সকল নিক্ষেপ করতে লাগলো। বানর সেনাদলে হাহাকার উঠলো। এক একটি অস্ত্রে হাজার বানর নিহত হল। বানর দের দেহ ছিন্নভিন্ন হল। তখন ভগবান শ্রীরাম ঐন্দ্রাস্ত্রে রাবণের হস্ত সকল কাটলেন। কিন্তু পুনঃ বাহু গজালো । তারপর রাবণ অগ্নিবাণ নিক্ষেপ করলে, ভগবান শ্রীরাম বরুণ বাণে নিবারণ করলেন। হাসতে হাসতে রাবণ পর্বত বাণ নিক্ষেপ করলো। ভগবান রাম পবণ বানে নিবৃত্ত করলেন। ক্রোধে রাবণ নাগাস্ত্র ছুঁড়লে তা এক বিষাক্ত সর্প হয়ে হা করে গিলে আসতে লাগলো। ভগবান শ্রীরাম গরুর অস্ত্র নিক্ষেপ করে সেই নাগাস্ত্রকে ধস্ত করে দিলেন ।
দিব্যাস্ত্র সকল ঝঙ্কারে ত্রিলোক কাঁপতে লাগলো । রাবণ যত দিব্যাস্ত্র মারেন যেমন- বজ্রশক্তি , কালপাশ, রুদ্রপাশ, যক্ষবাণ ইত্যাদি। ভগবান শ্রীরাম বজ্রবাণ, সূর্যবাণ , পাশুপাত, গন্ধর্ব অস্ত্রে রাবণের অস্ত্র গুলি চূর্ণ করলেন। অস্ত্র গুলি চূর্ণ হয়ে আগুনের ফুলকির ন্যায় মেদিনীর ওপর ঝরে পড়লো । রাবণের প্রতাপে চারপাশে অন্ধকার নেমে এসেছিলো । মন্ত্র পড়ে রাবণ ব্রহ্মাস্ত্র নিক্ষেপ করলেন । ব্রহ্মাস্ত্র এসে ভগবান শ্রীরামকে প্রদক্ষিণ করে অদৃশ্য হল। উন্মত্ত হয়ে রাবণ নারায়নাস্ত্র নিক্ষেপ করলে, সেই অস্ত্র প্রবল বেগে এসে শ্রীরামকে প্রদক্ষিণ করে অদৃশ্য হল। ক্ষিপ্ত রাবণ শিবাস্ত্র প্রয়োগ করলে, সেই অস্ত্র পূর্ববৎ এসে প্রদক্ষিণ করে অদৃশ্য হল । ক্রোধে রাবণ দেবজিত নামক বাণ নিক্ষেপ করলেন । ভয়ানক শব্দে সেই অস্ত্রকে এগিয়ে আসতে দেখে ভগবান শ্রীরাম কৌমুদিনীশক্তি নিক্ষেপ করলেন। ভগবান শ্রীরামের বাণ গিয়ে রাবণের বাণকে ধ্বংস করে দিলো। রাবণ একের পর এক শর সন্ধান আরম্ভ করলেন। ভগবান রাম বশিষ্ঠ, বিশ্বামিত্র, অগ্যস্তের প্রদত্ত শরে রাবণের শর নষ্ট করে দিলেন । তারপর পুনঃ শর দ্বারা রাবণের হস্ত পদ মুণ্ড কাটলেন । কিন্ত আবার গজালো ।
তাকে গুণ গণ কছু খয়ে জড়মতি তুলসীদাস ।
জিমি নিজ বল অনুরূপ তে মাছী উড়ই অকাস ।।
কাটে সির ভুজ বার বহু মরত ন ভট লঙ্কেস ।
প্রভু ক্রীড়ত সুর সিদ্ধ মুনি ব্যকুল দেখি কলেস ।।
( তুলসীদাসী রামায়ণ )
অর্থাৎ- সেই যুদ্ধের কিছু গুনাগুন ক্ষুদ্র বুদ্ধি তুলসীদাস বর্ণনা করলেন ; তা যেন নিজ পুরুষার্থ অনুসারে মাছির আকাশে উড়া । মস্তক বাহু বহুবার খণ্ডিত হল, তবুও রাবণ মরল না । শ্রীপ্রভু তো তখন লীলাভিনয় করেছেন কিন্তু ঘটনা দেখে মুনি, সিদ্ধ ও দেবতা সেই ক্লেশ প্রত্যক্ষ করে ব্যাকুল হয়ে পড়লেন ।
এইভাবে রাবণ অট্টহাস্য করে আকাশে উঠলেন তার রথ সহ । সেখান থেকে দিব্যাস্ত্র সকল চালনা করে সুগ্রীবের সেনাদের বধ করতে লাগলেন। মনে হল বিশাল দাবানলে পতঙ্গেরা ভস্ম হচ্ছে। তখন ভগবান শ্রীরাম বললেন- “মাতলি! তুমি রথ আকাশে রাবণের সম্মুখে নিয়ে চলো।” মাতলি রথকে আকাশে নিয়ে উঠলো । সেখানে ভগবান শ্রীরাম বললেন- “রাবণ! আজ তোমার নিস্তার নেই। এই অন্তিমবার তোমাকে অনুরোধ জানাচ্ছি সীতাকে ফিরিয়ে দিয়ে যুদ্ধ বন্ধ করো।” রাবণ বলল- “যতদিন রাবণের দেহে প্রাণ আছে ততদিন তুমি সীতাকে স্বপ্নেও ফিরে পাবে না।” এই বলে রাবণ যক্ষ বাণ নিক্ষেপ করলো। ভগবান শ্রীরাম অর্ধচন্দ্র বাণে তাহা ধ্বংস করে দিলেন।
দুজনের অস্ত্রের আঘাতে এত আলো উৎপন্ন হল যে চোখ মেলে তাকানো গেলো না । বানর ও রাক্ষসেরা আকাশে তাকিয়ে সেই যুদ্ধ দেখছিলেন । দেবতারা দেখছিলেন । আকাশে দুজনের রথ এদিক সেদিক গমন করছিলো। একে অপরের দিকে বাণ নিক্ষেপ করছিলেন । সেই সকল দিব্যাস্ত্র ধূমকেতুর ন্যায় সংঘর্ষ হচ্ছিল্ল। দেখে মনে হচ্ছিল্ল দুটি ধূমকেতুর মুখোমুখি সংঘর্ষ হচ্ছে। এবং সেই সকল অস্ত্রের চূর্ণ নক্ষত্র মণ্ডলের তারকার ন্যায় ভূতলে পতিত হচ্ছিল্ল। রাবণ কত শত দিব্যাস্ত্র মন্ত্র পড়ে প্রয়োগ করলো। ভগবান শ্রীরাম ততবার বাণ নিক্ষেপ করলেন। রাবণের ধনুক কেটে ফেললেন। রথের সারথি, অশ্ব কে বধ করলেন। ছত্র কেটে ফেললেন। এইভাবে ভগবান শ্রীরাম পুনঃ নানা দিব্যাস্ত্রে রাবণের হস্ত, মুণ্ড কাটলে আবার ধড়ে জোড়া লাগলো। তখন নবমী অপরাহ্ণ । সেই শুভ সময় আবির্ভূত। যার জন্য রামাবতার গ্রহণ। বিভীষণ তখন আকাশে উঠে ভগবান শ্রীরামকে বললেন-
সুনু সরবগ্য চরাচর নায়ক ।
প্রণতপাল সুর মুনি সুখদায়ক ।।
নাভিকুণ্ড পিযূষ বস যাকেঁ ।
নাথ জিঅত রাবনু বল তাকেঁ ।।
( তুলসীদাসী রামায়ণ )
অর্থাৎ- বিভীষণ বললেন “ হে সর্বজ্ঞ ! হে বিশ্বচরাচরের প্রভু! হে শরণাগতবৎসল হে দেবতা ও মুনিদের সুখপ্রদায়ক ! শুনুন । এর নাভিকুণ্ডে অমৃতের নিবাস! হে নাথ এর ফলেই এ বারবার বেঁচে উঠছে।”
ব্রহ্মার বরে রাবণের উদরে অমৃত কুম্ভ ছিলো , এই কুম্ভ না শুকালে রাবণের মৃত্যু হবে না। এই শুনে ভগবান শ্রীরাম ধনুকে ব্রহ্মাস্ত্র আনয়ন করলেন। সেই ব্রহ্মাস্ত্র দিয়ে প্রলয়াগ্নি নির্গমন হল। ত্রিলোক কম্পমান হল। দেবতারা হাস্যমুখে সব দেখতে লাগলো। ভগবান শ্রীরাম বললেন- “দুষ্ট রাবণ! সারাজীবন ভরে তুই যে পাপ আর অধর্ম করেছিস, আজ তার অন্ত হবে।” এই বলে ভগবান শ্রীরাম , রাবণের দিকে মন্ত্র পড়ে ব্রহ্মাস্ত্র ছুড়লেন । প্রলয় আগুন উৎপন্ন করে ব্রহ্মাস্ত্র ছুটে গেলো। রাবণ এই দেখে শত দিব্যাস্ত্র নিক্ষেপ করেও ব্রহ্মাস্ত্রকে বিফল করতে পারলো না। ব্রহ্মাস্ত্র গিয়ে রাবণের উদরে বিঁধলো। উদরের সব অমৃত শুকিয়ে গেলো ( কৃত্তিবাসী রামায়ণে অন্য রকম লেখা। তুলসীদাসী রামায়ণ থেকে লেখা হয়েছে। কৃত্তিবাসী রামায়নে মন্দোদরীর নিকট হতে রাবণের মৃত্যুবান হরণ, জীবনে ক্রন্দন করেন নি নিকষা বুড়ীর চোখের জল দিয়ে অস্ত্রে প্রাণ সঞ্চার, হনুমানের সেই অস্ত্র আনয়ন ইত্যাদি আছে ।) । রাবণ গগন হতে ভূমিতে পড়লো । তাঁর রথ গগন থেকে ভূমিতে পড়ে চূর্ণ হল। রাবণ যখন ভূমিতে পড়লো তখন মেদিনী কেঁপে উঠলো ।
( ক্রমশঃ )
দিব্যাস্ত্র সকল ঝঙ্কারে ত্রিলোক কাঁপতে লাগলো । রাবণ যত দিব্যাস্ত্র মারেন যেমন- বজ্রশক্তি , কালপাশ, রুদ্রপাশ, যক্ষবাণ ইত্যাদি। ভগবান শ্রীরাম বজ্রবাণ, সূর্যবাণ , পাশুপাত, গন্ধর্ব অস্ত্রে রাবণের অস্ত্র গুলি চূর্ণ করলেন। অস্ত্র গুলি চূর্ণ হয়ে আগুনের ফুলকির ন্যায় মেদিনীর ওপর ঝরে পড়লো । রাবণের প্রতাপে চারপাশে অন্ধকার নেমে এসেছিলো । মন্ত্র পড়ে রাবণ ব্রহ্মাস্ত্র নিক্ষেপ করলেন । ব্রহ্মাস্ত্র এসে ভগবান শ্রীরামকে প্রদক্ষিণ করে অদৃশ্য হল। উন্মত্ত হয়ে রাবণ নারায়নাস্ত্র নিক্ষেপ করলে, সেই অস্ত্র প্রবল বেগে এসে শ্রীরামকে প্রদক্ষিণ করে অদৃশ্য হল। ক্ষিপ্ত রাবণ শিবাস্ত্র প্রয়োগ করলে, সেই অস্ত্র পূর্ববৎ এসে প্রদক্ষিণ করে অদৃশ্য হল । ক্রোধে রাবণ দেবজিত নামক বাণ নিক্ষেপ করলেন । ভয়ানক শব্দে সেই অস্ত্রকে এগিয়ে আসতে দেখে ভগবান শ্রীরাম কৌমুদিনীশক্তি নিক্ষেপ করলেন। ভগবান শ্রীরামের বাণ গিয়ে রাবণের বাণকে ধ্বংস করে দিলো। রাবণ একের পর এক শর সন্ধান আরম্ভ করলেন। ভগবান রাম বশিষ্ঠ, বিশ্বামিত্র, অগ্যস্তের প্রদত্ত শরে রাবণের শর নষ্ট করে দিলেন । তারপর পুনঃ শর দ্বারা রাবণের হস্ত পদ মুণ্ড কাটলেন । কিন্ত আবার গজালো ।
তাকে গুণ গণ কছু খয়ে জড়মতি তুলসীদাস ।
জিমি নিজ বল অনুরূপ তে মাছী উড়ই অকাস ।।
কাটে সির ভুজ বার বহু মরত ন ভট লঙ্কেস ।
প্রভু ক্রীড়ত সুর সিদ্ধ মুনি ব্যকুল দেখি কলেস ।।
( তুলসীদাসী রামায়ণ )
অর্থাৎ- সেই যুদ্ধের কিছু গুনাগুন ক্ষুদ্র বুদ্ধি তুলসীদাস বর্ণনা করলেন ; তা যেন নিজ পুরুষার্থ অনুসারে মাছির আকাশে উড়া । মস্তক বাহু বহুবার খণ্ডিত হল, তবুও রাবণ মরল না । শ্রীপ্রভু তো তখন লীলাভিনয় করেছেন কিন্তু ঘটনা দেখে মুনি, সিদ্ধ ও দেবতা সেই ক্লেশ প্রত্যক্ষ করে ব্যাকুল হয়ে পড়লেন ।
এইভাবে রাবণ অট্টহাস্য করে আকাশে উঠলেন তার রথ সহ । সেখান থেকে দিব্যাস্ত্র সকল চালনা করে সুগ্রীবের সেনাদের বধ করতে লাগলেন। মনে হল বিশাল দাবানলে পতঙ্গেরা ভস্ম হচ্ছে। তখন ভগবান শ্রীরাম বললেন- “মাতলি! তুমি রথ আকাশে রাবণের সম্মুখে নিয়ে চলো।” মাতলি রথকে আকাশে নিয়ে উঠলো । সেখানে ভগবান শ্রীরাম বললেন- “রাবণ! আজ তোমার নিস্তার নেই। এই অন্তিমবার তোমাকে অনুরোধ জানাচ্ছি সীতাকে ফিরিয়ে দিয়ে যুদ্ধ বন্ধ করো।” রাবণ বলল- “যতদিন রাবণের দেহে প্রাণ আছে ততদিন তুমি সীতাকে স্বপ্নেও ফিরে পাবে না।” এই বলে রাবণ যক্ষ বাণ নিক্ষেপ করলো। ভগবান শ্রীরাম অর্ধচন্দ্র বাণে তাহা ধ্বংস করে দিলেন।
দুজনের অস্ত্রের আঘাতে এত আলো উৎপন্ন হল যে চোখ মেলে তাকানো গেলো না । বানর ও রাক্ষসেরা আকাশে তাকিয়ে সেই যুদ্ধ দেখছিলেন । দেবতারা দেখছিলেন । আকাশে দুজনের রথ এদিক সেদিক গমন করছিলো। একে অপরের দিকে বাণ নিক্ষেপ করছিলেন । সেই সকল দিব্যাস্ত্র ধূমকেতুর ন্যায় সংঘর্ষ হচ্ছিল্ল। দেখে মনে হচ্ছিল্ল দুটি ধূমকেতুর মুখোমুখি সংঘর্ষ হচ্ছে। এবং সেই সকল অস্ত্রের চূর্ণ নক্ষত্র মণ্ডলের তারকার ন্যায় ভূতলে পতিত হচ্ছিল্ল। রাবণ কত শত দিব্যাস্ত্র মন্ত্র পড়ে প্রয়োগ করলো। ভগবান শ্রীরাম ততবার বাণ নিক্ষেপ করলেন। রাবণের ধনুক কেটে ফেললেন। রথের সারথি, অশ্ব কে বধ করলেন। ছত্র কেটে ফেললেন। এইভাবে ভগবান শ্রীরাম পুনঃ নানা দিব্যাস্ত্রে রাবণের হস্ত, মুণ্ড কাটলে আবার ধড়ে জোড়া লাগলো। তখন নবমী অপরাহ্ণ । সেই শুভ সময় আবির্ভূত। যার জন্য রামাবতার গ্রহণ। বিভীষণ তখন আকাশে উঠে ভগবান শ্রীরামকে বললেন-
সুনু সরবগ্য চরাচর নায়ক ।
প্রণতপাল সুর মুনি সুখদায়ক ।।
নাভিকুণ্ড পিযূষ বস যাকেঁ ।
নাথ জিঅত রাবনু বল তাকেঁ ।।
( তুলসীদাসী রামায়ণ )
অর্থাৎ- বিভীষণ বললেন “ হে সর্বজ্ঞ ! হে বিশ্বচরাচরের প্রভু! হে শরণাগতবৎসল হে দেবতা ও মুনিদের সুখপ্রদায়ক ! শুনুন । এর নাভিকুণ্ডে অমৃতের নিবাস! হে নাথ এর ফলেই এ বারবার বেঁচে উঠছে।”
ব্রহ্মার বরে রাবণের উদরে অমৃত কুম্ভ ছিলো , এই কুম্ভ না শুকালে রাবণের মৃত্যু হবে না। এই শুনে ভগবান শ্রীরাম ধনুকে ব্রহ্মাস্ত্র আনয়ন করলেন। সেই ব্রহ্মাস্ত্র দিয়ে প্রলয়াগ্নি নির্গমন হল। ত্রিলোক কম্পমান হল। দেবতারা হাস্যমুখে সব দেখতে লাগলো। ভগবান শ্রীরাম বললেন- “দুষ্ট রাবণ! সারাজীবন ভরে তুই যে পাপ আর অধর্ম করেছিস, আজ তার অন্ত হবে।” এই বলে ভগবান শ্রীরাম , রাবণের দিকে মন্ত্র পড়ে ব্রহ্মাস্ত্র ছুড়লেন । প্রলয় আগুন উৎপন্ন করে ব্রহ্মাস্ত্র ছুটে গেলো। রাবণ এই দেখে শত দিব্যাস্ত্র নিক্ষেপ করেও ব্রহ্মাস্ত্রকে বিফল করতে পারলো না। ব্রহ্মাস্ত্র গিয়ে রাবণের উদরে বিঁধলো। উদরের সব অমৃত শুকিয়ে গেলো ( কৃত্তিবাসী রামায়ণে অন্য রকম লেখা। তুলসীদাসী রামায়ণ থেকে লেখা হয়েছে। কৃত্তিবাসী রামায়নে মন্দোদরীর নিকট হতে রাবণের মৃত্যুবান হরণ, জীবনে ক্রন্দন করেন নি নিকষা বুড়ীর চোখের জল দিয়ে অস্ত্রে প্রাণ সঞ্চার, হনুমানের সেই অস্ত্র আনয়ন ইত্যাদি আছে ।) । রাবণ গগন হতে ভূমিতে পড়লো । তাঁর রথ গগন থেকে ভূমিতে পড়ে চূর্ণ হল। রাবণ যখন ভূমিতে পড়লো তখন মেদিনী কেঁপে উঠলো ।
( ক্রমশঃ )
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন