দশমী তিথিতে শ্রীরামচন্দ্রের বিজয় উৎসব পালন করা হল। বানরেরা লম্ফ- ঝম্ফ করে নিজ আনন্দ প্রকাশ করতে লাগলো। কত শত ঢাক- ঢোল- ন্যাকরা- শিঙা- দুন্দুভি বাজিয়ে নৃত্য করতে লাগলো । লঙ্কার ভেতরে প্রবেশ করে বাগানের মিষ্ট মধুর ফল গ্রেগ্রাসে ভক্ষণ করলো। মধু পান করলো, কচি পত্র ভক্ষণ করলো। “জয় শ্রী রাম” ধ্বনিতে দিগ্বিদিক ধ্বনিত করলো। আনন্দে উল্লাসে মত্ত হল। রাবণের ওপর বিজয় লাভ হয়েছে এই কথা স্মরণ করা মাত্রই তাহাদিগের মনে আনন্দের হিল্লোল বয়ে গেলো । মাতলি রথ সহ বিদায় নিলেন । শাস্ত্র মেনে রাবণের শ্রাদ্ধ করা হল । বিভীষণ তখন প্রভু শ্রীরামকে লঙ্কায় নিয়ে যেতে চাইলে, অতি মূল্যবাণ রত্নাদি প্রদান করতে চাইলে রঘুপতি মানা করে বললেন- “মিত্র! ইহার আমার প্রয়োজন নেই। চতুর্দশ বৎসর সমাপন হতে আর কিঞ্চিৎ বিলম্ব আছে। ইত পূর্বে আমি কোন রাজ নগরে প্রবেশ করতে পারবো না। তুমি বরং এই বানর মর্কট দিগকে দান করো। ইহারা বহু দূর থেকে এসেছে। যুদ্ধে বহু কষ্ট সহ্য করে আমাকে বিজয় এনে দিয়েছে। ইহারা যাহা চায় তাহাই দাও।” বিভীষণ তখন বানর সেনাদের যার যা কাম্য সেই মতো স্বর্ণ আভূষণ, ধন- রত্ন প্রদান করলেন। বানরেরা পুঁটলিতে বেঁধে নিলো। এবার দেশে ফিরবার পালা। দেশে সকলের আত্মীয় স্বজন আছে । এরপর ভগবান শ্রীরাম , ভ্রাতা লক্ষ্মণকে বললেন- “ভ্রাতা! বিভীষণ আমার পরম মিত্র তথা আমার ভক্ত । যুদ্ধের পূর্বে আমি ইহাকে বচন দিয়েছিলাম যে রাবণ বধের পর তাহাকে লঙ্কার রাজা করবো । এখন আমার বচন পালনের সময় আগত । তুমি বানর দিগকে বিভিন্ন পুন্য নদী ও সরোবরের পবিত্র সলিল আনয়ন করতে প্রেরণ করো। ধর্মাত্মা বিভীষণের রাজ্যভিষেকের সময় আগত।” ভগবান শ্রীরামের আদেশে মনের ন্যায় বেগবান বানরেরা নানা পুন্য নদীর সলিল ও সরোবরের জল নিয়ে এলো । ভগবান শ্রীরামের আদেশে লক্ষ্মণ লঙ্কার বাহিরেই মিত্র বিভীষণের রাজ্যাভিষেক করলেন। পবিত্র সলিল দ্বারা , বৈদিক মন্ত্র দ্বারা অভিষেক হল। বিভীষণ হলেন রাক্ষস দের রাজা । লঙ্কার সম্রাট । বিভীষণের মস্তকে লঙ্কার মুকুট শোভিত হল। সরমা হলেন লঙ্কার মহারানী । মন্দোদরী সহ রাবণের অনান্য বিধবা পত্নী সকলে ধন্য ধন্য করতে লাগলো ।
এরপর শ্রীরাম হনুমানকে বললেন- “মারুতি! এই যুদ্ধে তোমার অবদান যুগে যুগে প্রসিদ্ধ হয়ে থাকবে । তুমি মহাবীর রূপে চারযুগে প্রতাপী হয়ে থাকবে । বতস্য ! তুমি প্রথম জানকীর সংবাদ আমাকে এনে দিয়েছিলে। তুমি এবার অশোক বাটিকায় গিয়ে সীতাকে সব সংবাদ প্রদান করো। কাল প্রভাতেই সে যেনো আমার নিকটে আসে । আহা রাবণের রাজ্যে সে বন্দিনী থেকে না জানি কত যাতনা সহ্য করে আছে । এ কেবল সীতার ন্যায় ধৈর্যশীলা নারীর পক্ষেই সম্ভব। তুমি সীতাকে, আমার- লক্ষ্মণ ও সুগ্রীবের কুশল সংবাদ দেবে।” হনুমান লম্ফ দিয়ে অশোক বাটিকায় প্রবেশ করলো। হনুমানকে দেখেই, সেই অশোক বাটিকা তছনছ ও অগ্নিকাণ্ডের কথা স্মরণ হতেই রাক্ষসী চেড়ীরা অস্ত্র ফেলে পলায়ন করলো । হনুমান তখন মাতা সীতাকে প্রনাম করে বলল- “মা আপনার দুঃখের দিন সমাপন হয়েছে । প্রভু শ্রীরামের হস্তে রাবণ পরাজিত ও নিহত হয়েছে। এখন আপনি মুক্ত । কেউ আপনাকে আর প্রভুর থেকে দূরে রাখতে পারবে না । প্রভুর সহিত আপনার শীঘ্রই মিলন হবে । এই লঙ্কায় আপনি আর কোন প্রকার ভয় পাইবেন না। কারণ প্রভুর মিত্র বিভীষণ এখন এই লঙ্কার রাজা। আপনি এই লঙ্কাকে নিজ বাটি জ্ঞান করে আর একটি রাত মাত্র এই বনে অধিষ্ঠান করুন । কাল প্রত্যহেই প্রভুর নিকট আপনাকে নিয়ে যাওয়া হবে।” সীতাদেবী বললেন- “বতস্য হনুমান! এই যুদ্ধের পর আমি মুক্তি পেয়ে অবশ্যই আনন্দিত হয়েছি। তুমি আমার নিদর্শন নিয়ে প্রভু শ্রীরামকে দিয়েছিলে। তুমি এই খুশীর সংবাদ আনলে । আমি এই দিনেরই প্রতীক্ষা করছিলাম । তুমি গিয়ে রঘুনাথকে আমার অভিবাদন প্রদান করবে।” হনুমান বিদায় নিলেন। এরপর বিভীষণ , সরমা সহিত সেই স্থানে আসলেন। বিভীষণ বললেন- “দেবী! আপনাকে প্রণাম ! এখন আপনি মুক্ত। আপনি চাইলে লঙ্কার প্রাসাদে গিয়ে নিবাস করতে পারেন । আমার অগ্রজ আপনাকে অনেক দুঃখ ও ক্লেশ প্রদান করেছেন। আপনি আদেশ দিলে আমি সেই রাক্ষসী চেড়ীদের শাস্তি প্রদান করবো। আমি আমার নিহত অগ্রজের পক্ষ হইতে আপনার নিকট ক্ষমা চাইছি। দয়া করে পূর্বের ঘটনা আর মনে রাখবেন না। এতে আপনার অভিশাপে লঙ্কার ক্ষতি হতে পারে। কারণ আপনার অশ্রুবিন্দু ঘাতক অস্ত্ররূপে রাক্ষস দের বিনাশ করেছে।”
সীতাদেবী বললেন- “আপনার এই যুদ্ধে অবদান অনেক লঙ্কাপতি ! আপনিই ত সব সময়ে আমার স্বামী, দেবরকে সহায়তা করেছেন । কাকে আর কি শাস্তি দেবো? যে এই সকল শাস্তির বিধান প্রদান করেছিলো- সে আজ নিজেই শাস্তি ভোগ করে ধরিত্রী থেকে বিদায় নিয়েছে। আমার কারোর প্রতি কোন অভিযোগ নেই। লঙ্কাকে আমি নিজের শত্রু জ্ঞান কদাপি করি নি । কারণ লঙ্কায় আপনার ন্যায় ধর্মাত্মা- ত্যাগী বিরাজ করেন, সরমার ন্যায় সতী বিরাজ করেন, দেবী মন্দোদরীর ন্যায় তেজস্বিনী নারী বিরাজ করেন, বীর শ্রেষ্ঠ মেঘনাদ ও মহাসতী প্রমীলা বিরাজ করতেন, কুম্ভকর্ণের ন্যায় শাস্ত্রজ্ঞ বীর বিরাজ করতেন। এখানে আমি মায়ের অভাব বোধ করিনি। কারণ দেবী ত্রিজটা আমাকে সর্বদা কন্যার ন্যায় পালন করেছেন । সুতরাং এই লঙ্কার প্রতি আমার অভিযোগ কোন কালেই ছিলো না। এই সকল ধ্বংস হয়েছে রাবণের কুবুদ্ধির কারণে। তাহাকে বহুবার বুঝিয়েছি, সে কোন কথাই স্মরণ করে নি। আপনাকে অনেক অভিনন্দন জানাই। আপনি কারোর প্রতিই কোন শাস্তি প্রদান করবেন না।” সরমা বললেন- “দেবী! আপনি সতী শ্রেষ্ঠা। আপনাকে স্বয়ং অগ্নিদেব সুরক্ষা প্রদান করেন । আমার একান্ত ইচ্ছা আপনাকে সাজিয়ে রঘুনাথের কাছে কাল প্রেরণ করবো।” সেই নিশি রাত্রি শ্রীরাম ও সীতাদেবীর কাছে কোটি বর্ষের ন্যায় অতিক্রান্ত হতে লাগলো। দুজনেই প্রার্থনা জানালেন শীঘ্র যেন ভাস্কর দেব গগনে উদিত হন । রাত পার করে দিবা আসলো। সরমা নিজ হস্তে সীতাদেবীকে সাজিয়ে দিলেন । একটি দোলাতে বসালেন । সকলে পুস্প বর্ষণ করতে লাগলেন । রাক্ষসী বিধবা নারীরা ক্রন্দন করতে করতে সীতার সামনে আসলেন। সীতাদেবী বুঝলেন এদের কষ্ট কি? রাক্ষসী বিধবারা অভিশাপ দিলেন- “তোমার কারণে আমরা বিধবা হয়েছি, তুমিও স্বামী সুখ উপভোগ করতে পারবে না। শীঘ্রই তোমাদের বিচ্ছেদ হবে।” এই শুনে যেনো স্তব্ধ হয়ে গেলো চতুর্দিকে। সীতাদেবীর চোখ থেকে জল পড়তে লাগলো। তিঁনি বুঝলেন কতটা দুঃখে রাক্ষসী দিগের মুখ হতে এই শাপ বেরিয়েছে । সীতাদেবী বললেন- “জানি আপনারা আমার ওপর ক্রুদ্ধ! এক নারীর দুঃখ কেবল অপর নারীই বুঝতে পারে। স্বামী বিচ্ছেদের যন্ত্রনা আমিও ভোগ করেছি। আপনারা আমাকেই অপরাধী মানেন । কিন্তু স্বামী ভিন্ন অপর কাউকে গ্রহণ করা অধর্ম। আমার এই পরিস্থিতিতে আর কি বা করবার ছিলো। আপনাদের সকল অভিশাপ ও শোক আমি মস্তকে ধারণ করলাম।” এই বলে সীতাদেবী সেখান হতে বিদায় নিলেন। বাহকেরা সীতাদেবীকে নিয়ে লঙ্কার বাহিরে আসলেন । তিঁনি যখন প্রভু শ্রীরামের কাছে যেতে চাইলেন তখন প্রভু শ্রীরাম সীতার দিক হতে মুখ ঘুরিয়ে বললেন- “দাঁড়াও সীতা! তুমি এখুনি আসবে না। তুমি লঙ্কায় বন্দিনী ছিলে। অগ্নিপরীক্ষা দিয়ে তোমাকে সতীত্ব প্রমান করতে হবে।”
( ক্রমশঃ )
এরপর শ্রীরাম হনুমানকে বললেন- “মারুতি! এই যুদ্ধে তোমার অবদান যুগে যুগে প্রসিদ্ধ হয়ে থাকবে । তুমি মহাবীর রূপে চারযুগে প্রতাপী হয়ে থাকবে । বতস্য ! তুমি প্রথম জানকীর সংবাদ আমাকে এনে দিয়েছিলে। তুমি এবার অশোক বাটিকায় গিয়ে সীতাকে সব সংবাদ প্রদান করো। কাল প্রভাতেই সে যেনো আমার নিকটে আসে । আহা রাবণের রাজ্যে সে বন্দিনী থেকে না জানি কত যাতনা সহ্য করে আছে । এ কেবল সীতার ন্যায় ধৈর্যশীলা নারীর পক্ষেই সম্ভব। তুমি সীতাকে, আমার- লক্ষ্মণ ও সুগ্রীবের কুশল সংবাদ দেবে।” হনুমান লম্ফ দিয়ে অশোক বাটিকায় প্রবেশ করলো। হনুমানকে দেখেই, সেই অশোক বাটিকা তছনছ ও অগ্নিকাণ্ডের কথা স্মরণ হতেই রাক্ষসী চেড়ীরা অস্ত্র ফেলে পলায়ন করলো । হনুমান তখন মাতা সীতাকে প্রনাম করে বলল- “মা আপনার দুঃখের দিন সমাপন হয়েছে । প্রভু শ্রীরামের হস্তে রাবণ পরাজিত ও নিহত হয়েছে। এখন আপনি মুক্ত । কেউ আপনাকে আর প্রভুর থেকে দূরে রাখতে পারবে না । প্রভুর সহিত আপনার শীঘ্রই মিলন হবে । এই লঙ্কায় আপনি আর কোন প্রকার ভয় পাইবেন না। কারণ প্রভুর মিত্র বিভীষণ এখন এই লঙ্কার রাজা। আপনি এই লঙ্কাকে নিজ বাটি জ্ঞান করে আর একটি রাত মাত্র এই বনে অধিষ্ঠান করুন । কাল প্রত্যহেই প্রভুর নিকট আপনাকে নিয়ে যাওয়া হবে।” সীতাদেবী বললেন- “বতস্য হনুমান! এই যুদ্ধের পর আমি মুক্তি পেয়ে অবশ্যই আনন্দিত হয়েছি। তুমি আমার নিদর্শন নিয়ে প্রভু শ্রীরামকে দিয়েছিলে। তুমি এই খুশীর সংবাদ আনলে । আমি এই দিনেরই প্রতীক্ষা করছিলাম । তুমি গিয়ে রঘুনাথকে আমার অভিবাদন প্রদান করবে।” হনুমান বিদায় নিলেন। এরপর বিভীষণ , সরমা সহিত সেই স্থানে আসলেন। বিভীষণ বললেন- “দেবী! আপনাকে প্রণাম ! এখন আপনি মুক্ত। আপনি চাইলে লঙ্কার প্রাসাদে গিয়ে নিবাস করতে পারেন । আমার অগ্রজ আপনাকে অনেক দুঃখ ও ক্লেশ প্রদান করেছেন। আপনি আদেশ দিলে আমি সেই রাক্ষসী চেড়ীদের শাস্তি প্রদান করবো। আমি আমার নিহত অগ্রজের পক্ষ হইতে আপনার নিকট ক্ষমা চাইছি। দয়া করে পূর্বের ঘটনা আর মনে রাখবেন না। এতে আপনার অভিশাপে লঙ্কার ক্ষতি হতে পারে। কারণ আপনার অশ্রুবিন্দু ঘাতক অস্ত্ররূপে রাক্ষস দের বিনাশ করেছে।”
সীতাদেবী বললেন- “আপনার এই যুদ্ধে অবদান অনেক লঙ্কাপতি ! আপনিই ত সব সময়ে আমার স্বামী, দেবরকে সহায়তা করেছেন । কাকে আর কি শাস্তি দেবো? যে এই সকল শাস্তির বিধান প্রদান করেছিলো- সে আজ নিজেই শাস্তি ভোগ করে ধরিত্রী থেকে বিদায় নিয়েছে। আমার কারোর প্রতি কোন অভিযোগ নেই। লঙ্কাকে আমি নিজের শত্রু জ্ঞান কদাপি করি নি । কারণ লঙ্কায় আপনার ন্যায় ধর্মাত্মা- ত্যাগী বিরাজ করেন, সরমার ন্যায় সতী বিরাজ করেন, দেবী মন্দোদরীর ন্যায় তেজস্বিনী নারী বিরাজ করেন, বীর শ্রেষ্ঠ মেঘনাদ ও মহাসতী প্রমীলা বিরাজ করতেন, কুম্ভকর্ণের ন্যায় শাস্ত্রজ্ঞ বীর বিরাজ করতেন। এখানে আমি মায়ের অভাব বোধ করিনি। কারণ দেবী ত্রিজটা আমাকে সর্বদা কন্যার ন্যায় পালন করেছেন । সুতরাং এই লঙ্কার প্রতি আমার অভিযোগ কোন কালেই ছিলো না। এই সকল ধ্বংস হয়েছে রাবণের কুবুদ্ধির কারণে। তাহাকে বহুবার বুঝিয়েছি, সে কোন কথাই স্মরণ করে নি। আপনাকে অনেক অভিনন্দন জানাই। আপনি কারোর প্রতিই কোন শাস্তি প্রদান করবেন না।” সরমা বললেন- “দেবী! আপনি সতী শ্রেষ্ঠা। আপনাকে স্বয়ং অগ্নিদেব সুরক্ষা প্রদান করেন । আমার একান্ত ইচ্ছা আপনাকে সাজিয়ে রঘুনাথের কাছে কাল প্রেরণ করবো।” সেই নিশি রাত্রি শ্রীরাম ও সীতাদেবীর কাছে কোটি বর্ষের ন্যায় অতিক্রান্ত হতে লাগলো। দুজনেই প্রার্থনা জানালেন শীঘ্র যেন ভাস্কর দেব গগনে উদিত হন । রাত পার করে দিবা আসলো। সরমা নিজ হস্তে সীতাদেবীকে সাজিয়ে দিলেন । একটি দোলাতে বসালেন । সকলে পুস্প বর্ষণ করতে লাগলেন । রাক্ষসী বিধবা নারীরা ক্রন্দন করতে করতে সীতার সামনে আসলেন। সীতাদেবী বুঝলেন এদের কষ্ট কি? রাক্ষসী বিধবারা অভিশাপ দিলেন- “তোমার কারণে আমরা বিধবা হয়েছি, তুমিও স্বামী সুখ উপভোগ করতে পারবে না। শীঘ্রই তোমাদের বিচ্ছেদ হবে।” এই শুনে যেনো স্তব্ধ হয়ে গেলো চতুর্দিকে। সীতাদেবীর চোখ থেকে জল পড়তে লাগলো। তিঁনি বুঝলেন কতটা দুঃখে রাক্ষসী দিগের মুখ হতে এই শাপ বেরিয়েছে । সীতাদেবী বললেন- “জানি আপনারা আমার ওপর ক্রুদ্ধ! এক নারীর দুঃখ কেবল অপর নারীই বুঝতে পারে। স্বামী বিচ্ছেদের যন্ত্রনা আমিও ভোগ করেছি। আপনারা আমাকেই অপরাধী মানেন । কিন্তু স্বামী ভিন্ন অপর কাউকে গ্রহণ করা অধর্ম। আমার এই পরিস্থিতিতে আর কি বা করবার ছিলো। আপনাদের সকল অভিশাপ ও শোক আমি মস্তকে ধারণ করলাম।” এই বলে সীতাদেবী সেখান হতে বিদায় নিলেন। বাহকেরা সীতাদেবীকে নিয়ে লঙ্কার বাহিরে আসলেন । তিঁনি যখন প্রভু শ্রীরামের কাছে যেতে চাইলেন তখন প্রভু শ্রীরাম সীতার দিক হতে মুখ ঘুরিয়ে বললেন- “দাঁড়াও সীতা! তুমি এখুনি আসবে না। তুমি লঙ্কায় বন্দিনী ছিলে। অগ্নিপরীক্ষা দিয়ে তোমাকে সতীত্ব প্রমান করতে হবে।”
( ক্রমশঃ )
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন