এভাবে দিন কাটতে লাগলো সুখে শান্তিতে। রামরাজ্য মানেই শান্তি। কয়েক মাস অতিক্রান্ত হল । অতিথিরা একে একে বিদায় গ্রহণ করলেন । একদিন ব্রহ্মা , বিশ্বকর্মাকে ডেকে আদেশ দিলেন- “হে মহাভাগ! শ্রীরাম ও সীতাদেবীর বিনোদনের জন্য এক সুন্দর বন নির্মাণ করুন। তাহাতে কিছুকাল শ্রীরামচন্দ্র, সীতাদেবী সহিত নিবাস করবেন । তাহাতে দেবকন্যারা থাকবেন। এছারা স্বর্গের গন্ধর্ব কিন্নর কিন্নরী উপস্থিত থেকে সেখানে আনন্দ বর্ধন করবেন। অপ্সরা গণ নৃত্য করবেন। সেই বন যেনো লঙ্কার অশোক বন থেকেও অতি সুন্দর হয় ।” দেবশিল্পী বিশ্বকর্মা সেই মতো বন নির্মাণ করলেন । নানা সুন্দর সুগন্ধি পুস্পের বৃক্ষ তৈরী করলেন । আরোও তৈরী করলেন মিষ্ট ফলের বৃক্ষ ।
সুবর্ণের বৃক্ষ সব ফল ফুল ধরে ।
ময়ূর ময়ূরী নাচে ভ্রমর গুঞ্জরে ।।
সুললিত পক্ষীনাদ শুনিতে মধুর ।
নানা বর্ণ পক্ষী ডাকে আনন্দ প্রচুর ।।
বিকশিত পদ্মবন শোভে সরোবরে ।
রাজহংসগণ তথা আসি কেলি করে ।।
সরোবর চারিপাশে সুবর্ণের গাছ ।
জলজন্তু কেলি করে নানা বর্ণ মাছ ।।
( কৃত্তিবাসী রামায়ণ )
সেই রম্য বণ এতই সুন্দর করে গঠন করেছিলেন । বৃক্ষের শাখায় পক্ষী যুগল মধুর সুরে কলতান করছিলো। নানা পক্ষী কেবল মিষ্টিরব পরিবেশন করে প্রকৃতিকে মিষ্টমধুর করে গড়ে তুলেছিল। সেখানে এমনি সকল বৃক্ষের পাশে সোনার বৃক্ষ ছিলো। তাহার বেদী গুলো সোনার মুক্তা হীরা দিয়ে বাঁধানো ছিলো। টলটলে শীতল জলে ভরা মনোরম সরোবর নানা বর্ণের পদ্মে সুশোভিত ছিলো। বিচিত্র বর্ণের মৎস্য খেলা করছিলো সেই জলে। আর হংস হংসী যুগল নব অনুরাগে মনকে মোহিত করে প্রেম কেলিতে নিমগ্ন ছিলো। বসন্ত দেবতা এখানে আপন প্রভাব বিস্তৃত করেছিলো। বিশ্বকর্মা এসে বললেন- “হে প্রভু শ্রীরাম ! প্রজাপতির আদেশে আমি এই রম্য কানন আপনার ও সীতাদেবীর জন্যই নির্মিত করেছি। কৃপা করে কিছুকাল আপনি স্ত্রী সহিত এই কাননে বিরাজিত হোন।” ভগবান শ্রীরাম বললেন- “অবশ্যই দেবশিল্পী! আপনি প্রজাপতিকে আমার পক্ষ হতে অনেক ধন্যবাদ জানাবেন ।” এই বলে ভগবান শ্রীরাম, দেবী সীতা সহিত সেই অরন্যে প্রবেশ করলেন । বনের সৌন্দর্য দেখে মোহিত হলেন। পুস্পে পুস্পে নানা বর্ণের অপূর্ব সৌন্দর্যের প্রজাপতিরা খেলা করে বেড়াচ্ছে। মধুলোভী মধুকর অলিকুল পুস্প হতে পুস্পে গুনগুন করে মধু পান করছে । বিচিত্র বর্ণের নানা পক্ষীরা মধুর সুরে কলরব করছে । বৃক্ষ গুলির শাখা প্রশাখার মধ্য দিয়ে সূর্যের আলো এসে পড়ছে ধরিত্রী তে।
সেখানে অপ্সরা নৃত্য করছে। গন্ধর্বেরা নানান মিষ্ট সঙ্গীত বাদ্যবাজনা সহ গাইছে। কিন্নর কিন্নরী নানা নৃত্য করছে । যেনো স্বর্গের নন্দন কাননকে দেবশিল্পী ভূতলে আনয়ন করে দিয়েছেন । পুস্পে পুস্পে ভূমি ঢেকে গেছে। সেই সকল কোমল পুস্প রাশির ওপর দিয়ে শ্রীরাম ও সীতাদেবী চরণ রেখে চলে সমগ্র অরন্যের সৌন্দর্য দেখতে লাগলেন ।
পায়য়ামাস কাকুৎস্থঃ শচীমিব পুরন্দরঃ ।
মাংসানি চ সুমষ্টানি ফলানি বিবিধানি চ ।।
( বাল্মিকী রামায়ণ – উত্তরকাণ্ড - দ্বিপঞ্চাশঃ সর্গঃ – শ্লোক ১৯ )
অর্থাৎ - শ্রীরামচন্দ্র বাম বাহু দ্বারা সীতাকে লইয়া পবিত্র মৈরেয় মধু পান করালেন- যেভাবে ইন্দ্রদেবতা শচী দেবীকে মধু পান করান । কিঙ্কর গণ রামচন্দ্রের ব্যবহারের জন্য সুমিষ্ট মাংস এবং বিবিধ ফল আনিল।
নৃত্যগীত আনন্দ অনুষ্ঠান চলতে লাগলো। স্বর্গের দেবকন্যা , অপ্সরা, কিন্নর কিন্নরী, বিদ্যাধরী ও গন্ধর্বেরা নানা সুগন্ধি পুস্প প্রভু শ্রীরাম ও দেবী সীতার চরণে অর্পণ করলেন। বনজ চন্দন কাত্থ দ্বারা শ্রীরাম ও দেবী সীতার চরণ চর্চিত করলেন । শ্রীরাম ও সীতা দেবী সেই বনে সোনায় বাঁধানো বেদিতে উপবেশন করলেন । নৃত্য দেখে আনন্দিত হলেন । সঙ্গীত শুনে পুলকিত হলেন। বৃক্ষ গুলি থেকে আপনেই নানা সুগন্ধি পুস্পরাশি ভগবান শ্রীরাম ও মাতা সীতার ওপর ঝরে পড়লো । পক্ষীরা মিষ্ট রবে ভরিয়ে তুলল । মৃদুমন্দ শীতল বাতাস বয়ে গেলো সমগ্র বন কে দোলা দিয়ে । মধুমাসের পরিবেশ জুড়ে আছে সমগ্র অরণ্যে । আর সেই পরিবেশে চারপাশে কেবল যুগল পক্ষী, যুগল হরিণ , যুগল অনান্য সুন্দর প্রানী দেখলেন । হংসহংসী যুগল সরোবরে কেলি করে বেড়াচ্ছে । সর্বত্র যেনো প্রেমের পরিবেশ আর শান্তি ।
বিকশিত পদ্ম শোভে চারি সরোবরে ।
মধুলোভে নলিনীতে ভ্রমর গুঞ্জরে ।।
( কৃত্তিবাসী রামায়ণ )
শ্রীরামের সহিত সীতাদেবী কাটালেন সেখানে অনেক সময়। বনের মিষ্ট ফল, মধু গ্রহণ করলেন। চতুর্দশ বৎসরের অনেক স্মৃতি নিয়ে আলাপ করলেন । সীতাদেবী এই পরিবেশে খুবুই খুশী । পূর্বের ন্যায় নানা বনজ সুগন্ধি পুস্প দ্বারা মাল্য রচনা করে প্রভু শ্রীরামের গলে দিলেন। শ্রীরাম অপর একটি পুস্পের মাল্য দ্বারা সীতাদেবীর কণ্ঠ সুশোভিত করলেন । উভয়ে উভয়কে চন্দন দ্বারা সুশোভিত করলেন ।
এভাবে নিশি আগমন হল। চন্দ্রালোকে সেই কাননের শোভা পূর্ণতা পেলো। নানা নিশি পুস্প বিকশিত হল। জ্যোৎস্নার আলোকে সেই কাননের পথ গুলি সেই নিশি পুস্পের সুগন্ধে ঢেকে গেলো। নিঃশ্বাস গ্রহণেই সেই সকল পুস্পের গন্ধ ভরা বাতাস অন্তরে প্রবেশ করলো। জ্যোৎস্নার আলোক সমগ্র বৃক্ষের শাখায় শাখায় খেলে বেড়াচ্ছে। সরোবর গুলি চন্দ্রালোকে যেনো নিজেদের ভরিয়ে তুলেছে । শ্রীরামচন্দ্র তখন সীতাদেবীকে অনেক মধুর বাক্য বলিতে লাগলেন ।
প্রথম যৌবনী সীতা লক্ষ্মী অবতরী ।
ত্রৈলোক্য জিনিয়া রূপ পরমা সুন্দরী ।।
এত রূপ দিয়া সীতায় সৃজিল বিধাতা ।
কাঁচা স্বর্ণ বর্ণরূপে আলো করে সীতা ।।
দেখিয়া সীতার রূপ যুড়ায় যে আঁখি ।
চন্দ্রবদন রামচন্দ্র সীতা চন্দ্রমুখী ।।
পূর্ণ অবতার রাম সীতা মনোহরা ।
চন্দ্রের পাশেতে যেন শোভা পায় তারা ।।
( কৃত্তিবাসী রামায়ণ )
এইভাবে সুখে রাত্রি যাপন করতে লাগলেন শ্রীরাম ও সীতাদেবী। চতুর্দিকে নির্জন কাননের সৌন্দর্য চন্দ্রালোকে যখন পরিপূর্ণতা প্রাপ্তি করেছে, তখন সীতাদেবীকে পেয়ে শ্রীরাম পূর্ণ হলেন । চতুর্দশ বৎসরের বিচ্ছেদের শোক ভুলে গেলেন । কত রাত্রি কষ্টে যাপন করেছেন। বিচ্ছেদের কারণে ছিলেন কত দূরে । মধ্যে ছিলো কত বাঁধা । সেই সকল বাধাবিপত্তির অবসান হয়ে পুনঃ শ্রীরামের কাছে সীতাদেবী এসেছেন । অপূর্ব রজনী গত হতে লাগলো। এইভাবে তারা সুখে সেই রাত্রি কাননে কাটালেন । কিন্তু বিধাতা কাহার ভাগ্যে কি লেখেন বলা যায় না । বারবার সীতাদেবীর মনে হতে লাগলো রাক্ষসীদের প্রদত্ত অভিশাপের কথা । পুনঃ কি তাঁহাকে শ্রীরামের সাথে কেউ কাড়িয়া নেবে? এই ভাবতেই সীতাদেবী ভয়ে আঁতকে উঠলেন । ভগবান শ্রীরাম অভয় দিতে লাগলেন ।
( ক্রমশঃ )
সুবর্ণের বৃক্ষ সব ফল ফুল ধরে ।
ময়ূর ময়ূরী নাচে ভ্রমর গুঞ্জরে ।।
সুললিত পক্ষীনাদ শুনিতে মধুর ।
নানা বর্ণ পক্ষী ডাকে আনন্দ প্রচুর ।।
বিকশিত পদ্মবন শোভে সরোবরে ।
রাজহংসগণ তথা আসি কেলি করে ।।
সরোবর চারিপাশে সুবর্ণের গাছ ।
জলজন্তু কেলি করে নানা বর্ণ মাছ ।।
( কৃত্তিবাসী রামায়ণ )
সেই রম্য বণ এতই সুন্দর করে গঠন করেছিলেন । বৃক্ষের শাখায় পক্ষী যুগল মধুর সুরে কলতান করছিলো। নানা পক্ষী কেবল মিষ্টিরব পরিবেশন করে প্রকৃতিকে মিষ্টমধুর করে গড়ে তুলেছিল। সেখানে এমনি সকল বৃক্ষের পাশে সোনার বৃক্ষ ছিলো। তাহার বেদী গুলো সোনার মুক্তা হীরা দিয়ে বাঁধানো ছিলো। টলটলে শীতল জলে ভরা মনোরম সরোবর নানা বর্ণের পদ্মে সুশোভিত ছিলো। বিচিত্র বর্ণের মৎস্য খেলা করছিলো সেই জলে। আর হংস হংসী যুগল নব অনুরাগে মনকে মোহিত করে প্রেম কেলিতে নিমগ্ন ছিলো। বসন্ত দেবতা এখানে আপন প্রভাব বিস্তৃত করেছিলো। বিশ্বকর্মা এসে বললেন- “হে প্রভু শ্রীরাম ! প্রজাপতির আদেশে আমি এই রম্য কানন আপনার ও সীতাদেবীর জন্যই নির্মিত করেছি। কৃপা করে কিছুকাল আপনি স্ত্রী সহিত এই কাননে বিরাজিত হোন।” ভগবান শ্রীরাম বললেন- “অবশ্যই দেবশিল্পী! আপনি প্রজাপতিকে আমার পক্ষ হতে অনেক ধন্যবাদ জানাবেন ।” এই বলে ভগবান শ্রীরাম, দেবী সীতা সহিত সেই অরন্যে প্রবেশ করলেন । বনের সৌন্দর্য দেখে মোহিত হলেন। পুস্পে পুস্পে নানা বর্ণের অপূর্ব সৌন্দর্যের প্রজাপতিরা খেলা করে বেড়াচ্ছে। মধুলোভী মধুকর অলিকুল পুস্প হতে পুস্পে গুনগুন করে মধু পান করছে । বিচিত্র বর্ণের নানা পক্ষীরা মধুর সুরে কলরব করছে । বৃক্ষ গুলির শাখা প্রশাখার মধ্য দিয়ে সূর্যের আলো এসে পড়ছে ধরিত্রী তে।
সেখানে অপ্সরা নৃত্য করছে। গন্ধর্বেরা নানান মিষ্ট সঙ্গীত বাদ্যবাজনা সহ গাইছে। কিন্নর কিন্নরী নানা নৃত্য করছে । যেনো স্বর্গের নন্দন কাননকে দেবশিল্পী ভূতলে আনয়ন করে দিয়েছেন । পুস্পে পুস্পে ভূমি ঢেকে গেছে। সেই সকল কোমল পুস্প রাশির ওপর দিয়ে শ্রীরাম ও সীতাদেবী চরণ রেখে চলে সমগ্র অরন্যের সৌন্দর্য দেখতে লাগলেন ।
পায়য়ামাস কাকুৎস্থঃ শচীমিব পুরন্দরঃ ।
মাংসানি চ সুমষ্টানি ফলানি বিবিধানি চ ।।
( বাল্মিকী রামায়ণ – উত্তরকাণ্ড - দ্বিপঞ্চাশঃ সর্গঃ – শ্লোক ১৯ )
অর্থাৎ - শ্রীরামচন্দ্র বাম বাহু দ্বারা সীতাকে লইয়া পবিত্র মৈরেয় মধু পান করালেন- যেভাবে ইন্দ্রদেবতা শচী দেবীকে মধু পান করান । কিঙ্কর গণ রামচন্দ্রের ব্যবহারের জন্য সুমিষ্ট মাংস এবং বিবিধ ফল আনিল।
নৃত্যগীত আনন্দ অনুষ্ঠান চলতে লাগলো। স্বর্গের দেবকন্যা , অপ্সরা, কিন্নর কিন্নরী, বিদ্যাধরী ও গন্ধর্বেরা নানা সুগন্ধি পুস্প প্রভু শ্রীরাম ও দেবী সীতার চরণে অর্পণ করলেন। বনজ চন্দন কাত্থ দ্বারা শ্রীরাম ও দেবী সীতার চরণ চর্চিত করলেন । শ্রীরাম ও সীতা দেবী সেই বনে সোনায় বাঁধানো বেদিতে উপবেশন করলেন । নৃত্য দেখে আনন্দিত হলেন । সঙ্গীত শুনে পুলকিত হলেন। বৃক্ষ গুলি থেকে আপনেই নানা সুগন্ধি পুস্পরাশি ভগবান শ্রীরাম ও মাতা সীতার ওপর ঝরে পড়লো । পক্ষীরা মিষ্ট রবে ভরিয়ে তুলল । মৃদুমন্দ শীতল বাতাস বয়ে গেলো সমগ্র বন কে দোলা দিয়ে । মধুমাসের পরিবেশ জুড়ে আছে সমগ্র অরণ্যে । আর সেই পরিবেশে চারপাশে কেবল যুগল পক্ষী, যুগল হরিণ , যুগল অনান্য সুন্দর প্রানী দেখলেন । হংসহংসী যুগল সরোবরে কেলি করে বেড়াচ্ছে । সর্বত্র যেনো প্রেমের পরিবেশ আর শান্তি ।
বিকশিত পদ্ম শোভে চারি সরোবরে ।
মধুলোভে নলিনীতে ভ্রমর গুঞ্জরে ।।
( কৃত্তিবাসী রামায়ণ )
শ্রীরামের সহিত সীতাদেবী কাটালেন সেখানে অনেক সময়। বনের মিষ্ট ফল, মধু গ্রহণ করলেন। চতুর্দশ বৎসরের অনেক স্মৃতি নিয়ে আলাপ করলেন । সীতাদেবী এই পরিবেশে খুবুই খুশী । পূর্বের ন্যায় নানা বনজ সুগন্ধি পুস্প দ্বারা মাল্য রচনা করে প্রভু শ্রীরামের গলে দিলেন। শ্রীরাম অপর একটি পুস্পের মাল্য দ্বারা সীতাদেবীর কণ্ঠ সুশোভিত করলেন । উভয়ে উভয়কে চন্দন দ্বারা সুশোভিত করলেন ।
এভাবে নিশি আগমন হল। চন্দ্রালোকে সেই কাননের শোভা পূর্ণতা পেলো। নানা নিশি পুস্প বিকশিত হল। জ্যোৎস্নার আলোকে সেই কাননের পথ গুলি সেই নিশি পুস্পের সুগন্ধে ঢেকে গেলো। নিঃশ্বাস গ্রহণেই সেই সকল পুস্পের গন্ধ ভরা বাতাস অন্তরে প্রবেশ করলো। জ্যোৎস্নার আলোক সমগ্র বৃক্ষের শাখায় শাখায় খেলে বেড়াচ্ছে। সরোবর গুলি চন্দ্রালোকে যেনো নিজেদের ভরিয়ে তুলেছে । শ্রীরামচন্দ্র তখন সীতাদেবীকে অনেক মধুর বাক্য বলিতে লাগলেন ।
প্রথম যৌবনী সীতা লক্ষ্মী অবতরী ।
ত্রৈলোক্য জিনিয়া রূপ পরমা সুন্দরী ।।
এত রূপ দিয়া সীতায় সৃজিল বিধাতা ।
কাঁচা স্বর্ণ বর্ণরূপে আলো করে সীতা ।।
দেখিয়া সীতার রূপ যুড়ায় যে আঁখি ।
চন্দ্রবদন রামচন্দ্র সীতা চন্দ্রমুখী ।।
পূর্ণ অবতার রাম সীতা মনোহরা ।
চন্দ্রের পাশেতে যেন শোভা পায় তারা ।।
( কৃত্তিবাসী রামায়ণ )
এইভাবে সুখে রাত্রি যাপন করতে লাগলেন শ্রীরাম ও সীতাদেবী। চতুর্দিকে নির্জন কাননের সৌন্দর্য চন্দ্রালোকে যখন পরিপূর্ণতা প্রাপ্তি করেছে, তখন সীতাদেবীকে পেয়ে শ্রীরাম পূর্ণ হলেন । চতুর্দশ বৎসরের বিচ্ছেদের শোক ভুলে গেলেন । কত রাত্রি কষ্টে যাপন করেছেন। বিচ্ছেদের কারণে ছিলেন কত দূরে । মধ্যে ছিলো কত বাঁধা । সেই সকল বাধাবিপত্তির অবসান হয়ে পুনঃ শ্রীরামের কাছে সীতাদেবী এসেছেন । অপূর্ব রজনী গত হতে লাগলো। এইভাবে তারা সুখে সেই রাত্রি কাননে কাটালেন । কিন্তু বিধাতা কাহার ভাগ্যে কি লেখেন বলা যায় না । বারবার সীতাদেবীর মনে হতে লাগলো রাক্ষসীদের প্রদত্ত অভিশাপের কথা । পুনঃ কি তাঁহাকে শ্রীরামের সাথে কেউ কাড়িয়া নেবে? এই ভাবতেই সীতাদেবী ভয়ে আঁতকে উঠলেন । ভগবান শ্রীরাম অভয় দিতে লাগলেন ।
( ক্রমশঃ )
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন